অসহায়ত্ব
আমাকে তুচ্ছ ভেবে বারবার
দূরে ঠেলে দেওয়া হয়
তারপরও যখন আমি এক’পা-দু’পা করে পদক্ষেপ নেই
বিকট শব্দে আমাকে স্তম্ভিত
করে
মনে প্রবল ভয়ের চাপ সৃষ্টি
করে
যেন আমি চতুষ্পদ প্রাণীর
মতো জীবন যাপন করি
আমার স্বকীয়তা কেড়ে নেয়া
হয়
আমাকে অবমূল্যায়ন করা হয়
গুটিসুটি হয়ে চুপটি মেরে
রঙিন পৃথিবী দেখা থেকে
বিরত থাকতে বলা হয়
তবুও আমার জীর্ন
মন-প্রাচীর ভেদ করে
প্রায়ই স্বপ্ন-আলো দলবেঁধে
আসে
আমাকে টেনে তোলে- তাদের
সাথে খানিক কদম
হাঁটতে শেখায়;
আমিও মনের অগোচরে হেঁটে
চলি।
তারপর’ই আমার ভয় হয়
বিকট শব্দে লাঞ্ছিত হবার,
কখন এসে আমাকে যে রক্তাত্ত
করে দেয়
ব্যাথার আহাজারিতে শুষ্ক
রসবোধের সূচনা করে
তারপরও আমি প্রকৃতি পানে
চেয়ে থাকি
অদৃশ্য হাতের স্নেহ পেয়ে
আবার যখন ছলছল চোখে
হাটুর ভাঁজ ভেঙ্গে
দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করি
তখন কেউ পাশে থাকে না আমার
তিল পরিমাণ জায়গা থাকে না
কারো হৃদয়ে
আমার জন্য “আহ্” শব্দ বলার
বরং নিছক আর জঞ্জাল বাক্য
গোষ্ঠী দ্বারা আমাকে
তিরস্কার করা হয়
আমার জন্ম নিয়ে প্রশ্ন
তোলা হয়
আমার মায়ের ভৎসর্না করা হয়
এসব শুনে প্রায়শ আমার
কুষ্ঠকাঠিন্য দেহে
জ্বালাময়ী অশান্তি সৃষ্টি
হয়
তীব্র ক্ষোভ জন্ম নেয় একের
পর এক
মনে হয়- ঐ মুখগুলোকে ছেঁচে
ভীবৎস করে দেই
তা সম্ভবপর হয়ে উঠে না
ঘন নিঃশ্বাসের সাথে সমস্ত
বিষাদ আর গ্লানি
বাতাসে মিশে
আমাকে নোংরা-কুৎসিত-অসভ্য
বলে গালমন্দ করে
ক্ষুধায় কাতরিয়ে উপর হয়ে
শুয়ে থাকা- এই আমাকে
লাঠিঘাত করে বিতাড়িত করে
কখনো বা শক্ত হাত মুঠিয়ে
আমার কংকাল
দেহে কষাঘাত করে
তখন অসহ্য বেদনা অনুভব করি
মুখাপেক্ষী হয়ে থাকি একজন
মমতাময়ীর
যে আমাকে কিঞ্চিৎ মমতা
দিয়ে একটি
আলোকিত জানালার অভিমুখে
ঠেলে দিবে
অথবা একটি পাল তোলা নৌকায়
তুলে
মুক্তির অবতারণা করবে
কিন্তু এমন কারোর সন্ধান’তো জন্ম অবধি আজ
পর্যন্ত মেলে নি
জন্মান্ধ এই চোখগুলো কেবল
পাশবিকতা
আর নৃশংসতার করুণ সাক্ষী
আমি কখনো রঙিন সুতোয় আঙুল
পেঁচিয়ে খেলা করতে শিখি নি
আমাকে বারবার ঠেলে পাঠানো
হয়েছে
নিন্দনীয়-অসোভন-অশ্লীল শত
কাজে
মোমের পুতুল বানিয়ে
আলো-আধারে
রেখেছে সহস্র বছর;
তারপরও আমি এখন যুবক।
পারিপার্শ্বিকতার যাঁতাকলে
পৃষ্ঠ
জীবন সংগ্রামী
নওজোয়ান সাজবার সাধ নেই
আমার।।
0 comments: