সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিপিডি) কর্তিক
স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি
পেয়েছে। কিন্তু এই স্বীকৃতি অর্জনের জন্য এর আগে বাংলাদেশ তিন দফায় ব্যর্থ হয়েছে।
এমন দফায় দফায় ব্যর্থতা নিয়ে বাংলাদেশ হয়তো উন্নয়নশীল দেশের তকমা না লাগিয়ে আরো
কয়েকটি যুগ কাটিয়ে দিতে পারত; কিন্তু বাংলাদেশ এ ব্যর্থতাকে সাহসে রূপান্তরিত করে দেশের
টেকসই ও সুষম উন্নয়নের দিকে আরো বেশি ধাবিত হয়েছে। যার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের
আজকে এই অর্জন এবং গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রুল মডেল।
তবে বাংলাদেশকে আরো বেশি ধৈর্য, নেতৃত্ব ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বিশ্ব
প্রতিযোগিতার বাজারে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। আর এ উন্নয়ন
অগ্রযাত্রায় যে খাতটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে- তা হচ্ছে শিক্ষা।
শিক্ষাই যেহেতু একটি জাতির উঠে দাঁড়ানোর সোপান, ঘুরে
দাঁড়ানোর মূলমন্ত্র। তাই সে সোপান নির্মানই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করার দাবী
রাখে।
শিক্ষাক্ষেত্রে যে জাতি যত বেশি সমৃদ্ধ, সে দেশ তত বেশি উন্নত। ইতিহাস তা'ই বলে। উন্নত বিশ্ব বলতে আমরা যে দেশগুলোকে বুঝিয়ে থাকি সে দেশগুলো নিজ নিজ দেশে ৩০ দশক থেকে বাধ্যতামূলক জনশিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সারা বিশ্বে বিভিন্ন দেশ সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম ও সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা বাস্তবায়ন লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে আসে। এই পরিবর্তনের ধারা প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে নতুন গতির সঞ্চার করে। এ সময়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন দেশে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়।
“৫০ দশকে নরওয়ে,ডেনমার্ক ও সুইডেনসহ বেশ কয়েকটি
দেশে পরীক্ষামূলকভাবে সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়। ৬০ দশকের শেষ
দিকে উন্নত দেশগুলোতে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায়
তাদের মূল ধারার বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা শুরু হয়। ৭০ দশকের শুরুতে উন্নয়নশীল
দেশগুলোতে সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়নে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের মাধ্যমে
রাষ্ট্রিয় দায়-দায়িত্ব সম্প্রসারণ করে। এই প্রেক্ষাপটে উন্নয়নশীল দেশগুলো
প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করে। তবে এ সময়ে
উন্নত দেশগুলোতে প্রতিবন্ধী শিশুরা সার্বজনীন শিক্ষার আওতায় ছিল না। এমনকি
যুক্তরাষ্টে বর্ণ ভিত্তিক বিশেষ বিদ্যালয় কাঠামো ভেঙ্গে পরে। ধীরে ধীরে এই
বিদ্যালয়ে সকল বর্ণের শিশুদের শিক্ষা বাস্তবায়নের প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধী
শিশুদের জন্য সাধারণ বিদ্যালয়ে আসার দৃষ্টি ভঙ্গি ও পথ উন্মুক্ত হয়। ৭০ দশকের
মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় প্রতিবন্ধী শিশুর শিক্ষা ও পুণর্বাসন
আইনের মাধ্যমে একীভূত শিক্ষা তরান্বিত হয়। মূলত সমন্বিত শিক্ষা বাস্তবায়নের
অভিজ্ঞতা এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকার বিষয়ক আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৮০ দশকের
মাঝামাঝি সময় থেকে উন্নত দেশগুলোতে যেমন-যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা
ও যুক্তরাজ্যে একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।”
আর সে কারনেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ারর মতো দেশগুলো পৃথিবীতে প্রভুত্ব করছে। তারা প্রকৃত অর্থে শিক্ষার অন্তমোহনীয় শক্তির তেজস্ক্রিয়তা দেখার ক্ষমতা অনেক আগেই লাভ করেছে। বাংলাদেশ যা দেখার ক্ষমতা লাভ করেছে গত কয়েক যুগ আগে। তবে বাংলাদেশের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশগুলো সকল শিশুর বাধ্যতামূলক শিক্ষা বাস্তবায়নে তথা অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বিশেষভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কিত ধারাবাহিক নতুন নতুন বেশ কিছু ধারণা নিয়ে এগিয়ে আসে। এই সব নতুন ধারণাসমূহ একীভূত শিক্ষার অন্তর্গত।
বলা বাহুল্য দেশের সার্বিক উন্নয়নের রূপরেখায় সবকিছুকে যখন একীভূত তথা একই
মালায় গেঁথে উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়, তখন তাকে সুষম উন্নয়ন বলে। তেমনিভাবে
শিক্ষাক্ষেত্রে যখন সমাজের সকল স্তরের মানুষ সক্রিয় অংশগ্রহণ করে শিক্ষা গ্রহণ
করতে পারে তখন তাকে একীভূত শিক্ষা বলে। এখানে ব্যক্তির
ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-জাত-প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী
ইত্যাদি বিষয়কে উপেক্ষা করে ব্যক্তির সর্বোচ্চ পরিচয় "শিক্ষার্থী"
পরিচয়কে বহৎভাবে দেখা হয়। ব্যক্তির অন্যসব পরিচয়কে ছাপিয়ে শুধু শিক্ষার্থী পরিচয়কে
আত্নীকরন করে মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তকরনই হচ্ছে একভূত শিক্ষা।
“Sebba
এবং Ainscow (1996) একীভূত শিক্ষার সংজ্ঞা
দিতে গিয়ে বলেছেন, “An inclusive school works from the principle that all
students in the community should learn together.”
Mittler(1995)-
এর মতে একীভুত শিক্ষায় বিদ্যালয় এবং প্রথাগত শিক্ষার আমূল পরিবর্তন
ঘটাতে হবে এবং বিদ্যালয়ের সমগ্র পাঠক্রমকে শিশুর চাহিদা মাফিক পরিবর্তন করতে হবে।
Jha(2002)-
ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একীভূত শিক্ষার সংজ্ঞা দান করেছেন। তাঁর মতে
একীভবন বা অন্তর্ভুক্তিকরণ হল একটি পদ্ধতি, কোন অবস্থা নয়,
যেখানে সমস্ত শিশুর চাহিদাকে পূরন করার চেষ্টা থাকবে এবং সেই
লক্ষ্যে পাঠক্রমকে পুনর্গঠিত করতে হবে।
সুতরাং আদর্শ একীভূত শিক্ষার ভাবনাটি হল এমন এক সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে
তোলা যেখানে সব ধরনের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় একীভূত
শিক্ষা কার্যক্রমে পরিবারের নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে সমবয়সী শিশুদের সাথে একই গুনগত
মানের শিক্ষার সুযোগ পাবে।”
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে একটি দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০ ভাগ
প্রতিবন্ধী। সে হিসেবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ প্রতিবন্ধীতার স্বীকার।
অতএব দেশের সুষম উন্নয়ন,
জীবন যাত্রার মান ও মানব উন্নয়ন সূচক সর্বোপরি জাতীয় স্বার্থে এমন
একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিষ্ক্রিয় রেখে একটি দেশ কোনোভাবেই এগিয়ে যেতে পারে না।
মূলত ৮০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে উন্নত দেশগুলোতে যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে একীভূত
শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমান বিশ্বে অনেক দেশ নতুন উদ্যম ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে
একভূত শিক্ষা বাস্তবায়ন লক্ষ্যার্থে কাজ করছে এবং উত্তরোত্তর সাফল্যও পাচ্ছে।
Millennium
Development Goal (MDG) এর ৮টি গোলের মধ্যে দ্বিতীয় লক্ষ্যে
সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছে এবং সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে,
২০১৫ সালের মধ্যে সকল শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকার এমডিজি বাস্তবায়নে অঙ্গিকারাবদ্ধ। তাই প্রান্তিক শিশুদেরকে বাদ
দিয়ে সর্বজনীন শিক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে ২০০৪ সালে দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-২)
এবং মাধ্যমিক শিক্ষা খাতে শিক্ষণ মান উন্নয়ন (টিকিউআই) কর্মসূচি বাস্তবায়নের
মাধ্যমেও একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তনের প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। তবে
পিইডিপি-২ এর অধীনে প্রাথমিক স্তরে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একীভূত শিক্ষার আওতায়
শিক্ষা সংক্রান্ত বিশেষ চাহিদার কার্যক্রমমের উদ্যোগ নেয়া হয়। যার ধারাবাহিকতা
স্বরূপ এনডিডি (Neuro-Developmental
Disabilities) ব্যতিত প্রতিবন্ধী শিশুর সমন্বিত/ বিশেষ শিক্ষা
নীতিমালা, ২০১৮ দেখা যায় যে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা যেন
সাধারন শিক্ষার্থীদের সাথে মূলধারার বিদ্যালয়গুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য
শিক্ষাক্রম ও সহপাঠ কার্যক্রম সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা এবং প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন
প্রতিবন্ধিতার জন্য বিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলো
স্পষ্টভাবে আলোকপাত করে।
বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৯(১) ও (৩), ২৭, ২৮(১), (২), ও (৪) এবং ২৯(১) অনুযায়ী সরকার দেশের অবহেলিত,
পশ্চাৎপদ, দরিদ্র, এতিম,
প্রতিবন্ধী এবং অনগ্রসর মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়ন নিশ্চিত করনার্থে
এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাছাড়া এনডিডি (Neuro-
Developmental Disabilities) ব্যতিত প্রতিবন্ধী শিশুর সমন্বিত/
বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৮ তে স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যাযুক্ত
প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অর্থাৎ নিউরো ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী বা এনডিডি ব্যক্তিসহ সকল
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জীবনমান উন্নয়ন এবং সমাজের সকল স্তরে তাদের অংশগ্রহণ
নিশ্চিতকরণে গুরুত্বরোপ করেছে। খসড়া নীতিমালায় একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন
পদ্ধতি ও কৌশলে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশগম্যতা,
ভর্তি, পরিবেশ ও সামাজিক কাঠামো, পাঠদান পদ্ধতি, শিক্ষা উপকরণ, রেজিস্ট্রেশন,
শিক্ষা মূল্যায়নের জন্য ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা, ঝরে পড়া রোধ, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা,
সুরক্ষা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় পরিপত্র বিধিমালা প্রয়োজনুযায়ী জারি
করতে হবে। এছাড়াও সংবিধানের ১৫ নং অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের শিক্ষালাভের কথা বলা
হয়েছে। যার ফলে অন্যান্যদের সাথে শিক্ষার ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির
সমসুযোগ ও অধিকার প্রদানে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও মর্যাদা
সুরক্ষা এবং সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরনের নিমিত্তে সরকার ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী
ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ প্রণয়ন এবং এনডিডি ব্যক্তির
জন্য নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাষ্ট আইন, ২০১৩
প্রণয়ন করেছে যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজের দক্ষতা অর্জন, যেমন- যোগাযোগ, নিজের যত্ন নেওয়া, সামাজিক দক্ষতা, নিজকে পরিচালনা করা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, শিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তি ইত্যাদি
বিষয় বর্ণিত হয়েছে।
কিন্তু বাস্তব চিত্রে একীভূত শিক্ষার কার্যত ভূমিকা, প্রয়োগ ও গুনগত অবস্থান খুব
বেশি দৃশ্যমান নয়; বরং বহুলাংশে হতাশাজনক। একটি প্রতিবন্ধী
শিশুকে মূলধারার বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণ করাতে ভর্তি সংক্রান্ত শর্তাদি, প্রবেশগম্যতা, যাতায়াত, ভৌতঅবকাঠামো,
শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচী, উপকরণ,
মূল্যায়ন ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক ইত্যাদি বিষয়ের যে ধরনের সংযোজন,
বিয়োজন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন
ও পরিবর্তনের কথা বলা আছে তা দৃষ্টিগোচর নয়। এমতবস্থায় দেশের পিছিয়ে পড়া বৃহৎ একটি
জনগোষ্ঠীকে অবহেলায় দূরে ঠেলে নয়; বরং ছোট ছোট সুযোগ,
কৌশল ও সদিচ্ছা দিয়ে মূলধারার প্রতিযোগিতায় দাঁড় করিয়ে কর্মক্ষম
জনশক্তি রূপান্তরই হবে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠঅর্জন।
লিখেছেন
হোসাইন সিয়াম।
লিখেছেন
হোসাইন সিয়াম।
তথ্যপুঞ্জি
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩।
এনডিডি (Neuro-Developmental
Disabilities) ব্যতিত প্রতিবন্ধী শিশুর সমন্বিত/ বিশেষ শিক্ষা
নীতিমালা, ২০১৮।
https://ictineducationbd.wordpress.com।
0 comments: