ডাউন সিনড্রোমহছেশরীরের এমন একটি অবস্থা যখন একজন মানুষের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্রোমোজোম থাকে।
ক্রোমোজোম হচ্ছে শরীরের মধ্যে অবস্থানকৃত জিনের একটি “প্যাকেট” ।এই প্যাকেজটি
বাচ্চা জন্মের পূর্বে কি অবস্থায় আছে,সবকিছুঠিকভাবে কাজ করতেছে কিনা সবকিছু চেক
করে। সাধারণত একটি বাচ্চা ৪৬টি ক্রোমোজোম বা ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমন্যেজন্মায়।যেইসব
বাচ্চাদের ডাউন সিনড্রোম রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে একটি বেশি ক্রোমোজোম এর আধিক্য
লক্ষ্য করা যায়।প্রয়োজন এর চেয়ে বেশি ক্রোমোজোম থাকাকে Trisomy বলে মেডীক্যাল সাইন্স এর
ভাষায়। ডাউন সিনড্রোম কে অনেকে Trisomy 21 নামেও চিনেন। ক্রোমোজোম এর এই এক্সট্রা সংখ্যাটিই বাচ্চার শারিরীক গঠন এবং
মস্তিষ্কের উন্নতির পরিবর্তন ঘটায় দেয়। যদিও যাদের ডাউন সিনড্রোম রয়েছে তাদেরকে
দেখতে অনেকটা একইরকম লাগে কিন্তু প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদাকর্মক্ষমতা রয়েছে।
সাধারনতডাউন সিনড্রোমআক্রান্তদেরআইকিউ সাধারণ মানুষদের থেকে কম হয় এবং নরমাল
মানুষদের চেয়ে একটু ধীরে কথা বলে।
ডাউন সিনড্রোম ব্যক্তিদের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
· চ্যাপ্টা মুখ অবয়ব । বিশেষ
করে নাকের দিকে।
·
পায়ের একটি আংগুল থেকে অন্য
আংগুলের মধ্যে গ্যাপ বেশি থাকে।
·
গোলাকৃতি চোখ (বড় বড়)।
·
ছোট ঘাড়।
·
ছোট কান।
·
জিহবা সহজেই মুখ থেকে বের
হয়ে যায়(জড়ানো জিহ্বা)।
·
ছোট হাত পা।
·
চোখের আইরিশে ছোট সাদা দাগ
থাকে অনেক সময়।
·
হাতের তালুতে সরু দাগ থাকে
(মসৃণ নয়)।
·
ছোট ছোট গোলাপী আংগুল।
·
দেহের পেশী দুর্বল হয়
তুলনামুলক ভাবে।
·
সাধারণ বাচ্চাদের চেয়ে খাটো
হয়।
যেসব উন্নয়ন এ বাধা দেখা
যায় বেশিঃ
·
আবেগপ্রবন বেশি।
·
বিচারবুদ্ধি কম।
·
মনোযোগ এর ঘাটতি।
·
সাধারণদের চেয়ে দেরীতে বুঝা।
·
সাধারণভাবে দেরীতে হাটতে
শিখে,বসতে শিখে।
ব্যাপকতাঃ
সাধারনত আমেরিকায় সবচেয়ে
বেশি ডাউন সিনড্রোম লক্ষ করা যায়। প্রতি বছর প্রায় ৬০০০ বাচ্চা জন্মের সময় থেকে এই
বৈকল্যে আক্রান্ত হয়।National Down
syndrome society(NDSS) এর মতে, প্রতি ৭০০ বাচ্চার
মধ্যে ১ জনের ডাউন সিনড্রোম হয়।
প্রকারভেদঃ
·
Trisomy 21
·
Mosaicism
·
Translocation
Trisomy 21- ২১ জোড়াটি এক্স্ট্রা
ক্রোমোজোম থাকাকেই Trisomy 21 বলে।
Mosaicism-এটি হয় যখন বাচ্চার ২১ জোড়া
ক্রোমোজোম কয়েকটি কোষে হয়,সবগুলোতেনয়।যাদেরMosaicism Down syndrome রয়েছে তাদের
লক্ষনতুলনামুলকভাবে কম দেখা যায়।
Translocation– যাদের ২১ জোড়া ক্রোমোজোম শুধু ১টি রয়েছে.৪৬টির সাথে শুধু ১টি এক্স্ট্রা
রয়েছে।
যেসব শিশুদের ডাউন
সিনড্রোম হওয়ার সম্ভাবনা বেশিঃ
·
যেইসব লোকেরা ৪০ বচর বয়সের
পরে সন্তানের বাবা হন।
·
যেইসব মায়েরা ৩৫ বছরের বয়সের
পর সন্তানের মা হন।
·
যাদের পরিবারে কোন সদস্যের
ডাউন সিনড্রোম রয়েছে।
·
যারা জেনেটিকট্রান্সলোকেশন
ক্যারি করেন (বাহক হিসেবে)।
প্রেগ্নন্যান্সির সময় জানার
উপায়ঃ
Nuchal Translucency
Testing –গর্ভকালীন সময়ের ১১-১৪ সপ্তাহের মধ্যে Ultra sound এর মাধ্যমে শব্দ প্রেরণ করে
ফিটাসের ঘাড়ের পিছনের টিস্যুগুলোর মাঝখানের জায়গা জেনে জানা যায়।
Integreted Test-৩ মাস গর্ভে থাকাকালীন সময়ে
একসাথে কয়েকটি টেস্ট করেও (Nuchal
Translucency+ Quadruple Screening Test) জানা যায়।
Chroionic Villus
Sampling (CVS) – প্লাসেন্টার ভিতরের উপাদানগুলো পরিক্ষার মাধ্যমে
Aminiocentesis-Amniotic
fluid-(বাচ্চাকে ঘিরে যেই তরল
থাকে মায়ের পেটে থাকা কালীন) পরিক্ষা করে।
Percutaneous
Umbilical Blood Sampling(PUBS)-Umbilical Cord এ থাকা রক্তের পরিক্ষা করে।
ডাউন সিনড্রোমেআক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্যান্য যেসব সমস্যা থাকতে পারেঃ
·
কানে শুনায় সমস্যা।
·
কোমরে সমস্যা।
·
লিউকোমিয়া।
·
Chronic
Costipation।
·
Dementia।
·
Hypothyroidism।
·
Obesity।
·
দেরিতে দাঁত উঠা।
·
Alzheimer’s
Disease।
·
Obstructive sleep
apnea- ঘুমানোর সময় হঠাৎ করে
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া
·
কানে ক্ষত হওয়া।
·
চোখে সমস্যা।
·
জন্ম থেকেই হৃদপিণ্ডে
সমস্যা।
ট্রিটমেন্টঃ
ডাউন সিনড্রোম একটি
চিরস্থায়ী অবস্থা।জন্মের পর থেকে সঠিকভাবে পদক্ষেপ নিলে মানসিক ও শারিরীক বিকাশে
উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।অনেকডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত বাচ্চারা সবার মতই সব কাজ করতে
পারে।
·
Sensory skill
·
Social Skill
·
Self-help skills
·
Motor skills
·
Language and
Cognitive Abilities
এইসব দক্ষতা বা কাজগুলা
বেশি বেশি চর্চা করলে সাধারণত অনেক বাধাই অতিক্রম হয়ে যায়।এবং অনেকটাই স্বাভাবিক
জীবনে চলে আসতে পারে।
রেফারেন্স
MD.SHOEB ADNAN
Audiology and Speech Language Pathology(3rd Batch)
Proyash Institute of Special Education and Research
Bangladesh University of Professionals
0 comments: